আসর শুরুর আগে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে সবার সংশয় ছিল গ্রুপ পর্ব পার করা নিয়েই। খোদ কোচ-অধিনায়কের কন্ঠেও ছিল একই সুর। কঠিন এক গ্রুপের পাশাপাশি ফর্মটাও যে ছিল না পক্ষে। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক জয়েই সরে গেছে সংশয়ের মেঘ। তাতে নিজেদের লক্ষ্যটাও বড় হয়ে গেছে শান্ত-লিটনদের৷ দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের আগে তাই কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, এই ম্যাচ জিতে সুপার এইটের পথ সুগম করতে চান তারা।
দক্ষিণ, শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি গ্রুপে রয়েছে নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। গ্রুপে এখন সেরা অবস্থানে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, দুই ম্যাচে দুই জয় তাদের। শ্রীলঙ্কার দুই ম্যাচ হেরে চলে গেছে বাদ পড়ার কাছাকাছি। সোমবার প্রোটিয়াদের হারাতে পারলে তাই পরের রাউন্ডে যাওয়াএ সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাটকীয়তায় ভরপুর এক ম্যাচে ২ উইকেটের জয়ের পর এই ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই বাড়তি অনুপ্রেরণা নিয়েই মাঠে নামবে দলটি।
ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে স্পষ্ট বললেন, বিশ্বকাপে তাদের স্বপ্নের পরিধি এখন বড় হয়ে গেছে। “(বিশ্বকাপে) প্রতিটি ম্যাচই চাপের। আমার মনে হয় (শ্রীলঙ্কা ম্যাচের) জয়ের ওরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। আমাদের জন্য এটা অনেক বড় একটা ম্যাচ ছিল। ম্যাচের আগে বেশ চাপ ছিল। তবে ছেলেদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। আমাদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আসছে। এবার আমরা এমন কিছু করতে চাই, যা আমরা আগে কখনোই করতে পারিনিম আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে চাই। সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে আরেকটা বড় সুযোগ হবে এই ম্যাচ।”
টি-টোয়েন্টিতে এখনও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো জয় নেই। এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে শেষ দুই সাক্ষাতেও হয়েছে ভরাডুবি। তবে এবারের বিশ্বকাপের উইকেটের আচরণ, লো-স্কোরিং ম্যাচ, কন্ডিশন সব মিলিয়ে প্রতিপক্ষের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসকে হারাতে অল্প রান তাড়ায় যেভাবে ভুগেছে প্রোটিয়ারা, সেটাও বাড়তি বিশ্বাস যোগাচ্ছে তাই।
হাথুরুসিংহে মনে করছেন, শক্তির দিক থেকে দুই দলের মাঝে খুব বেশি তফাত নেই এখন। “ব্যাটারদের জন্য এই উইকেট একেবারেই সহজ নয়। আর এই কারণেই দুই দল একই সমান্তরালে চলে এসেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। তবে ওদের সাথে খুব ভালো লড়াই করার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”
ম্যাচটা নিউ ইয়র্কে বলেই চিন্তার কারণ রয়েছে বাংলাদেশেরও। দলীয় স্কোর ১০০ পার করতেই যে ঘাম দিয়ে জ্বর ছুটে যাওয়ার দশা হচ্ছে দলগুলোর। শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসকে ৭৭ ও ১০৩ রান তাড়া করতে ভীষণ সংগ্রাম করতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর গতকাল পাকিস্তানকে তো এই মাঠেই ১১৯ রান নিয়েই হারিয়ে দিয়েছে ভারত।
অসমান বাউন্সের সাথে তাল সামলানো ভীষণ কঠিন হচ্ছে এই ভেন্যুতে। হাথুরুসিংহে অবশ্য বললেন, কন্ডিশন নিয়ে খুব বেশি ভাবনা নেই তাদের। “যেকোনো ব্যাটারের জন্যই কন্ডিশনটাই বড় চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতি ও কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে কাজটা কঠিন হয়ে যায়। প্রথমে ব্যাটিং করলে কী করতে হবে বা পরে ব্যাটিং করলে কী করতে হবে, এসব নিয়েই কাজ করেছি আমরা। নিজেরদের শক্তির জায়গায় অটল থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর এটার বড় অংশ হচ্ছে কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নেওয়া।”